১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১২:৩৬
গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘ আশ্রয়কেন্দ্র

গাজা উপত্যকার জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহু ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যার কারণে ফিলিস্তিনিরা এখন নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একদিনে অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন এবং ৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।



এমনকি জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহু ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যার কারণে ফিলিস্তিনিরা এখন নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র হামলায় একদিনে অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। নির্বিচারে বোমাবর্ষণের কারণে বহু ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে এবং জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলভিত্তিক আশ্রয়কেন্দ্রও ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

শনিবার শুধু গাজা সিটিতেই নিহতের সংখ্যা ৪৯ জনে পৌঁছালেও গোটা গাজা উপত্যকায় এই দিনে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৬২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, এই বোমাবর্ষণের ফলে গাজা সিটি থেকে অন্তত ৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, 'অবরোধ আর লাগাতার হামলার মধ্যে গাজা সিটির বাসিন্দারা এখন অমানবিক পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন।'

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে যে, গাজা সিটিকে পুরোপুরি দখলের লক্ষ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সেনারা মানুষকে প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে লিফলেট ফেলছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, 'প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর আবাসিক ভবন এবং জনসেবামূলক স্থাপনায় বোমা ফেলা হচ্ছে, মানুষ নিরাপদে সরে যাওয়ার সময়ও পাচ্ছেন না।' 

তিনি আরও বলেন, 'হামলার ধরন ও গতি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ইসরায়েলি সেনারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করছে।' তিনি আরও জানান যে, বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ জড়ো হয়েছেন।

তবে হামলার পরও অনেকে গাজা সিটিতে থেকে যাচ্ছেন অথবা দক্ষিণের শরণার্থী শিবিরে অমানবিক পরিস্থিতি দেখে আবার ফিরে আসছেন। দক্ষিণে অবস্থিত আল-মাওয়াসি ক্যাম্প এবং দেইর আল-বালাহ এলাকা ইতোমধ্যেই অতিরিক্ত ভিড়ে জর্জরিত এবং বারবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। 

আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, 'মানুষ পূর্ব দিক থেকে পশ্চিমে সরে আসছেন, কিন্তু খুব কম সংখ্যকই দক্ষিণে পৌঁছাতে পারছেন। দক্ষিণেও জায়গা নেই, ফলে অনেকে আবার গাজা সিটিতেই ফিরে আসছেন।'

ধারণা করা হচ্ছে, এখনো প্রায় ৯ লাখ মানুষ গাজা সিটিতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দাবি করেছে যে, গাজা সিটি থেকে আড়াই লাখের বেশি মানুষ পালিয়েছেন।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha